Saraswati Puja in WB School


( বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ : সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি কোনও মানুষের দ্বারা লিখিত নয় । এটি AI দ্বারা লেখা হয়েছে । তাই ভুলত্রুটি মার্জনীয় । তথ্যে কোনও ভুল থাকলে আমাদের জানাতে পারেন । তৎক্ষণাৎ সেটি সংশোধন করা হবে । )

পশ্চিমবঙ্গের স্কুলগুলোয় সরস্বতী পূজোর আয়োজন কোনো নতুন ঘটনা নয়। এই ঐতিহ্যের সূত্রপাত খুঁজতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে উনিশ শতকের গোড়ার দিকে, কলকাতার প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর দালানে। তখনকার দিনে হিন্দু স্কুল, সেন্ট জেমস স্কুল, প্রেসিডেন্সি কলেজের মতো বিখ্যাত বিদ্যাপীঠগুলোতেই প্রথম সরস্বতী পূজোর আয়োজনের চিহ্ন পাওয়া যায়। তবে সেসময় পূজোর আয়োজন ও পরিচালনা মূলত শিক্ষকদের দায়িত্ব ছিল, ছাত্র-ছাত্রীরা সাথে থাকলেও তা ছিল সহায়কের মতো।

নবজাগরণের আলোয়

মধ্য উনিশ শতক বাংলার নবজাগরণের সূচনাপর্ব। শিক্ষার প্রতি আগ্রহ তখন তুঙ্গস্থানে। সেই সঙ্গে স্কুলগুলোতে সরস্বতী পূজোর ঐতিহ্যও আরো গভীর মূল পেতে শুরু করে। ছাত্র-ছাত্রীরা এখন আর শুধু পূজো দেখে না, এর আয়োজনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। মন্দির সাজানো, আলপনা দেওয়া, ফুল তৈরি - সব কাজেই তাদের উৎসাহের কোনো কमी থাকে না।

জমকালো আয়োজন

উনিশ শতকের শেষের দিকে এসে স্কুলগুলোতে সরস্বতী পূজো আরো ব্যাপক ও জমকালো আকার ধারণ করে। শুধু পূজোই নয়, সাথে যুক্ত হয় নানা রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গান, নাচ, আবৃত্তি, নাটক - এইসব প্রতিযোগিতা ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সৃজনশীলতা ও মঞ্চে উপস্থিতির ভয় কাটিয়ে ওঠার মতো গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলি বিকাশে সহায় করে। আর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই উৎসব শুধু ধর্মীয় আচারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধা, ঐক্য ও সহযোগিতার भाव জাগিয়ে তোলে, শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয় সবার মনে।

স্বাধীনতার পর

স্বাধীনতার পরবর্তীকালে পশ্চিমবঙ্গের স্কুলগুলোতে সরস্বতী পূজোর ঐতিহ্য আরো মজবুত হয়। পূজোর আয়োজনে দেখা যায় আরো বৈচিত্র্য, আরো আড়ম্বর। প্রতিটি বিদ্যালয়ই চেষ্টা করে নিজের আয়োজনকে অনন্য করে তুলতে। তবে শুধু জাঁকজমকই নয়, সরস্বতী পূজো এখন আর শুধু একটি ধর্মীয় আচারও নয়। এটি পরিণত হয়েছে শিক্ষা ও সংস্কৃতির এক মিলনস্থলে।

আজকের দিন

পূজা , খেলাধুলা আর আনন্দে ম ম করে কেটে যায় এই দিনটি। সকালে পুজোর পর প্রসাদ বিতরণের পর সারা স্কুল জুড়ে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের নৃত্য, গান, আবৃত্তি, নাটকের মাধ্যমে মাতিয়ে দেয় সবাইকে। শিক্ষক-শিক্ষিকারাও পিছিয়ে থাকেন না। তাঁদের উৎসাহে আর নির্দেশনায় অনুষ্ঠান আরো জমে ওঠে।

দেখার মতো হয় ক্লাসের ছেলেমেয়েদের হাতেখড়ি দেওয়ার অনুষ্ঠান। হাতেখড়ি নেওয়ার পর তাদের লেখাপড়ার শুরুতে দেবীর আশীর্বাদ কামনা করা হয়। এই মুহূর্তে উপস্থিত সবার মনেই ভবিষ্যতের সুশিক্ষিত প্রজন্ম গড়ে তোলার প্রত্যয় জাগে।

অনেক স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। যেমন - চলন্ত প্রশ্নোত্তর, আলপনা আঁকা, রঙ্গোলি প্রতিযোগিতা। এগুলো ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সৃজনশীলতা ও দলগত কার্যকলাপকে উৎসাহিত করে।

দিনের শেষে সবাই মিলে খাওয়ার আয়োজন থাকে। স্কুল প্রাঙ্গণে সবাই মিলে বসে সাদাসিধে খাবার ভাগ করে নেওয়াটা এই উৎসবের আরেকটি মধুর দিক। শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এই সহযোগিতা ও আনন্দ ভাগ করে নেওয়া, জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়া - এটাই পশ্চিমবঙ্গের স্কুলগুলোতে সরস্বতী পূজোর আসল সার। এই ঐতিহ্য যেন চিরকাল ধরে রেখে চলে, সেই কামনাই করি আমরা সকলেই।



Post a Comment

আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন

Previous Post Next Post