রামমন্দির ও বাবরি মসজিদ বিতর্কের ইতিহাস ! প্রকৃত সত্য কি ?

History of the Ram Mandir Babri Masjid controversy
History of the Ram Mandir Babri Masjid controversy


History of the Ram Mandir Babri Masjid controversy : বহু চর্চিত রামমন্দিরের ভূমি পুজো হয়ে গেল গত ৫ই আগস্ট অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভাঙা নিয়ে সারা দেশে যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিলো, তা দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগেই এর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে সর্বসম্মতি রায়ে   নিরসন  করা হয়েছে

  

এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে একবছর আগে বলা হয়েছিলো যে জায়গাটি আনুপাতিক হারে হিন্দু মুসলিমের মধ্য ভাগ করে দেবার জন্য

 

১৯৯২ সালে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা মসজিদ টি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলো সেই দাঙ্গায় দুহাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলো এরপরেই তিক্ত বিরোধে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ যদিও আসল বিরোধ কয়েক দশক ধরে চলছিলো ষোল শতকের বাবরি মসজিদ টি  নিয়ে

 

 একটু পিছনের দিকে তাকালে দেখতে পাওয়া যায়, উত্তর প্রদেশের ফৈজাবাদ জেলায় রামকোট পর্বতের কাছে অযোধ্যা শর তো অবস্থিত ১৫২৮ খ্রিস্টাব্দে বাবরের আদেশে  এই মসজিদ টি নির্মাণ করা হয়েছিলো  যেখানে কিছু হিন্দুত্ববাদীরা মনে করেন যে ওখানে রাম মন্দির ছিলো

মোহন্ত রঘুবীর দাস ছিলেন অযোধ্যার পুরোহিত তিনি ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে ফৈজাবাদ আদালতে একটি মামলা করেন এই বলে যে , ওই মসজিদের চত্বরে রামের জন্মস্থান ছিলো এবং মোঘল আক্রমনের পরেও ওখানে মন্দির ছিলোকিন্তু এই আবেদন ওই সময় বাতিল হয়ে যায়

 

বিশেষ করে হিন্দু মুসলিমের এই মন্দির সংক্রান্ত মামলা তুমুল ভাবে শুরু হয়েছিল ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে  এমনিতে ছিল দেশ ভাগ এর ঘটনা তার উপর হিন্দু রামভক্তরা ওখানেই মন্দির তৈরির দাবি করতে থাকেনকারন হঠাৎ করে মন্দিরে পাওয়া গেলো রামলালার মূর্তি এই পরিস্থিতিতে মুসলিম রাও থেমে ছিলোনা তাই পরিস্থিতি না সামলাতে পেরে পুরো এলাকাটি সিল করে দেওয়া হয়েছিল

 

মন্দির পক্ষের নেতা গোপাল সিং  ফৈজাবাদ আদালতে এই সময় মামলা করেন , মূর্তি যেখানে পাওয়া গেছে ওখানে পুজোর অনুমতি চেয়ে মূর্তিটি ওখান থেকে সরানো যাবেনা এই নির্দেশিকা জারি করা হয়এলাহাবাদ আদালতে এর পক্ষে সায় দিয়ে বলা হয়.... মূর্তিটি ওখানে থাকবে

 

আবার ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে মনদির ট্রাস্টের প্রধান রামচন্দ্র দাস মামলা করেন পূজাপাঠেরঅনুমতি চেয়ে পরে তিনি মামলা তুলে নিলেও নির্মহী আখড়া ১৯৫৯ ওই স্থানের অধিকার চেয়ে মামলা করেন

 

একই স্থানের অধিকার ১৯৬১তে নিয়ে মামলা করেন সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকা কালীন ১৯৮৬তে স্থানীয় আদালত হিন্দু তীর্থযাত্রীদের প্রবেশের অধিকার দেন এরপরেই ১৯৯২- ডিসেম্বর মসজিদটি ভেঙ্গে ফেলা হলে শুরু হয় তুমুল অশান্তি ,দাঙ্গা যেখানে বহু মানুষ মারা যান

পরিস্থিতি সামাল দিতে কল্যাণ সিং এর বিজেপি সরকার ভেঙ্গে দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়

 

 এর পরে প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাও ক্ষমতায় এলে অযোধ্যায় বিশেষ জমি অধিগ্রহণ আইন দ্বারা জমিটিকে সরকারি সম্পত্তি হিসেবে বলা হয়

 

কিন্তু মসজিদ পন্থী নেতৃত্ব এর বিরুদ্ধে পিটিশন ফাইল করেন।।

সুপ্রিমকোর্টে ১৯৯৪ তে বলা হয় যে ইসলাম ধর্ম এর বিশ্বের যে কোনো জায়গায় এমনকি খোলা মাঠেও করা যাবে তাই বলা হয় ওই .৭৭ একর জমি অধিগ্রহণ করবে সরকার

   

২০০২থেকে ২০১৯ এর নভেম্বর পর্যন্ত চলতে থাকে মামলার শুনানি  ২০১৮,২০১৯ শুনানির অনেক গুলি দিন ধার্য্য হলেও মামলার জের চলতে থাকে ২০১৯ এর ৮এ জানুয়ারি পাঁচ সদস্যের একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ ঘোষণা করে সুপ্রীম কোর্ট যেখানে প্রধান রাখা হয় রঞ্জন গগৈ কে  ২০১৯ এর ১৬ই অক্টোবর কোর্টে শুনানি শেষ হয়, আর ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা হয় নভেম্বর সকাল দশটায়

 

রামমন্দিরের জন্য যে ওই .৭৭ একর জমিই দেওয়া হয় আর মুসলিমদের জন্য অন্যত্র একর জমি দেওয়া হয়

 

হিন্দু দের জমি দেওয়ার পক্ষে কিছু পুরাতাত্ত্বিক  প্রমান পাওয়া যায় সেখানে দেখা যায় ... মসজিদ টি ভাঙ্গার পরে ওখানে খননকার্য করে দেখা যায় যে পঞ্চাশটি স্তম্ভ পাওয়া যায় তা মন্দিরের হতে পারে  গম্বুজের মতো যে অংশগুলো পাওয়া গেছে তার সাথে বৌদ্ধ বিহারের অনেকটা মিল রয়েছে

 

এখন শুধু মন্দির তৈরির অপেক্ষা যার অপেক্ষায় শুধু ভারত নয়, দেশের বাইরেও বহু দেশ অপেক্ষা করছে


এবিষয়ে আপনার কি মতামত নিচে কমেন্টে জানান


Post a Comment

আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন

Previous Post Next Post