Gangasagar Mela 2024 : ১০০ যজ্ঞের সমান পুণ্য ! জানুন গঙ্গাসাগরের মাহাত্ম্য ।
হিন্দুদের সবথেকে বড়
উৎসব বা মেলা কুম্ভমেলা হল । আর কুম্ভমেলার পরেই স্থান রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গাসাগর
মেলার । গঙ্গা সাগর মেলা হল ভারতের একটি বেশ বড় মেলা । যেটি ভারতের
পশ্চিমবঙ্গ
রাজ্যের
দক্ষিণে
সাগর
দ্বীপের
দক্ষিণ
প্রান্তে
অবস্থিত
কপিলমনির
আশ্রমে প্রত্যেক বছর মকর সংক্রান্তিতে হয় । এটি একটি
বড় মেলা তার সাথে সাথে বলা চলে এটি একটি ধর্মীও উৎসব । গঙ্গা নদী (হুগলি
নদী)
ও
বঙ্গোপসাগরের
মিলন
স্থানকে
বলা
হয়
গঙ্গাসাগর । এই মেলার সময় সেখানে দেশের বহু মানুষ যায় । এই সময়
ওই স্থান হয়ে উঠে সাধুদের আগ্রা । এটি
একদিকে
তীর্থভূমি
আবার
অন্যদিকে
মেলাভূমি । জানা যায় এই দিন গঙ্গা স্নান করলে পুণ্য লাভ হয় ।
৮ জানুয়ারি সোমবার
থেকে
শুরু
হয়েছে
গঙ্গাসাগর
মেলা। প্রত্যেক বছর ১৪ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তি হয় । কিন্তু এবছর ১৫ জানুয়ারি
মকর সংক্রান্তি । ১৫ তারিখ মকর সংক্রান্তি হওয়ার কারন হচ্ছে, আগের রাতে সূর্য
মকর
রাশিতে
গোচর
করবে। সেই
কারণে
উদয়া
তিথি
অনুসারে
১৫
জানুয়ারি
হবে
সংক্রান্তি। ১৫ তারিখ ভোর বেলায় সাগরে পূণ্যস্নান করবেন ভক্তরা । এই মকর সংক্রান্তিকে ঘিরে এখন থেকেই জমজমাট হয়ে রয়েছে
মেলা
প্রাঙ্গন । শুধুমাত্র দেশের মানুষই নয় বিদেশ থেকেও বহু মানুষ
আসে এই মেলাতে ।
গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা -
এই মেলা চলবে প্রাঙ্গনে ৮ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত
। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় কপিল মুনির আশ্রম প্রাঙ্গনে
এই মেলা অনুষ্ঠিত হয় । আশা করা হচ্ছে এবছর প্রায় ৪০ লক্ষ পুণ্যার্থী আসবেন
। সেই কারণে নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে অনেক প্রখর । মেলায় বহু মানুষের ভিড়ে যাতে কোনও দুর্ঘটনা
না ঘটে সেই
দিকে নজর রাখছে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন খুঁটিয়ে দেখে এসেছেন
।
গঙ্গাসারের পৌরাণিক কথা -
আমরা গঙ্গা সাগরের অনেক
মাহাত্ম্য শুনেছি । কিন্তু গঙ্গাসারের পৌরাণিক কথা সম্পর্কে অনেকেই জানি না । পুরাণ অনুসারে অযোধ্যার ইক্ষাকু বংশের রাজা ছিলেন সাগর ।
সেই সাগর রাজার অশ্বমেধ যজ্ঞের
ঘোড়া চুরি
করা হয়েছিল । সেই ঘোড়া চুরি করে গঙ্গাসাগরের কপিল মুনির আশ্রমের কাছে সেগুলি লুকিয়ে
রাখা হয়েছিল । ঘোড়া গুলি লুকিয়ে রাখেন দেবরাজ ইন্দ্র । সেই ঘোড়া খুঁজতে কপিল মুনির রোষের মুখে পড়েন সাগর রাজার ৬০ হাজার পুত্র
সন্তান । কপিল মুনি তাদের অভিশাপ দিয়ে ভষ্ম করে দেন ।
সাগর রাজার নাতি তাঁর পূর্বপুরুষদের প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার
অনুরোধ করেন কপিল মুনির কাছে । তখন কপিল মুনি
বলেন গঙ্গা নদীকে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে নিয়ে আসতে হবে
। গঙ্গার স্পর্শে রাজার ৬০ হাজার পুত্র প্রাণ ফিরে পাবেন
। কিন্তু যদি স্বর্গের নদী তীব্র গতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে
তাহলে তখন পৃথিবী ভেসে যাবে । এই আশঙ্কায় মহাদেবের দ্বারস্থ হন ভগীরথ
। তখন ভগবান শিব তাঁর জটায় গঙ্গাকে ধারণ করে নেন এবং একটু একটু জল ছাড়েন তিনি ।
এই কারনেই মহাদেবের মাথায় গঙ্গার স্থান । মকর সংক্রান্তির দিনেই গঙ্গাসাগরে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে নামেন মা গঙ্গা
।
গঙ্গাসাগরের মাহাত্ম্য –
কথাতেই আছে 'সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার' । এই কথাটির মানে হচ্ছে সব তীর্থে বারবার গিয়ে যে পূণ্যলাভ হয়, গঙ্গাসাগরে মাত্র এক গেলেই সেই পরিমাণ পূণ্য লাভ করা সম্ভব হয় । হিন্দু ধর্মের মানুষের কাছে অত্যন্ত মাহাত্ম্যপূর্ণ এই তীর্থস্থান । এই স্থানে গঙ্গা নদী সাগরে এসে মিশেছে । সেইজন্য এই স্থানের নাম গঙ্গা সাগর । হিন্দু ধর্মের মানুষ পূর্ণ মনে বিশ্বাস করেন, বছরের এই দিনে গঙ্গা এবং সাগরের সঙ্গমে স্নান করলে ১০০টি যজ্ঞ সমান পুণ্যলাভ হয় । একবারের গঙ্গাস্নানে ১০০টি যজ্ঞ সমান পুণ্যলাভ হয় ।
প্রতিবেদনটি আপনাদের ভালো লাগলে এবং নিয়মিত এই ধরণের খবর পেতে নিচের গ্রুপের জয়েন হন ।
আমাদের Whatsapp চ্যানেল | |
আমাদের Facebook চ্যানেল | |
আমাদের Telegram গ্রুপ |
Post a Comment
আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন