ঘূর্ণিঝড় যশ সম্পর্কে জানুন অজানা সকল তথ্য
গত বছরের আমফান ঝড় এর ভয়ানক স্মৃতি কাটতে না কাটতে এই বছরেও আবার এক আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আবারো নাকি ধেয়ে আসছে আমফানের মতো ভয়ঙ্কর এক ঘূর্ণিঝড়! আর সেই ঝড় চলতি সপ্তাহতেই আছড়ে পড়তে পারে সুন্দরবনে। আবহাওয়াবিদ দের কথা অনুযায়ী, মনে করা হচ্ছে ২৩ থেকে ২৬ শে মে-র মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়তে পারে বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী এলাকায়।
Cick To Join Our - Whatsapp Group
JOIN : - WB PRIMARY TET WHATSAPP GROUP
ইতিমধ্যেই, ঘূর্ণিঝড় তওকতের ধাক্কায় বিপর্যস্ত পশ্চিম ভারত। এই বিপর্যয়ের এক সপ্তাহ পেরোতে না পেরোতে আবার একটি ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসতে চলেছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘যশ’। গতবছর আমফানের তান্ডবের সাক্ষী থাকার পর এবার যশের আগমনের খবরে ইতিমধ্যে ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দারা।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে খবর, উত্তর আন্দামান সাগরে যে নিম্নচাপটি রয়েছে, সেটিই আগামী ২২ মে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে। তারপরই তা স্থলভাগের দিকে ধীরে ধীরে সরতে থাকবে। শেষে ২৬ মে সকালেই ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’। এই ঘূর্ণিঝড় এর সঙ্গে মোকাবিলা করার চেষ্টায় ইতিমধ্যে একাধিক পদক্ষেপও নিতে শুরু করেছে প্রশাসন।
কিন্তু কেন এমন নাম ঘূর্ণিঝড়টির? কী বা এর নামের মানে? আবহবিদদের মতে, সাধারণ মানুষের কাছে ঝড় সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দিতে তার নাম থাকাটা দরকারি। নইলে একই সময় একই সমুদ্রে একাধিক ঝড় থাকলে চিহ্নিত করতে সমস্যা হয়। ঝড় চলে গেলেও একই সমস্যায় পড়েন আবহবিদরা।
আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, আসলে যে মহাসাগরে ঝড়ের উৎপত্তি হয় তার অববাহিকায় থাকা দেশগুলি নামকরণ করে। এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নামটি রেখেছে ওমান। এই যশ বা ইয়াস শব্দটির মানে হল হতাশা। ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, বাংলাদেশ, মায়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ইয়েমেন- এই ১৩টি দেশ নিয়ে তৈরি কমিটিই ঠিক করেছে নামটি।
এই শতকের শুরুর দিকে এই পদ্ধতি চালু হয়। যদিও কয়েক দশক আগে এসব নিয়ম ছিল না। তখন নানা ঘটনা থেকে ঝড়ের নাম ঠিক হত। কোনও ঝড়ে কোনও জাহাজ ডুবে গেলে সেই জাহাজের নামে হত ঝড়ের নাম। পৃথিবীতে মোট ১১টি সংস্থা নাম ঠিক করে।
২০০০ সাল থেকে ঝড়ের নামকরণের জন্য নিয়ম তৈরি করা হয়। তাতে ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন ও ইউনাইডেট নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়ার সদস্য দেশগুলি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করে। এতে থাকা ওই ১৩টি দেশ ১৩টি করে নাম দেয়। অর্থাৎ সবমিলিয়ে ১৬৯টি নাম জমা পড়ে। সেই তালিকা থেকেই ফণী, হুদহুদ, আমফান, নিঃসর্গ, তাওকত প্রভৃতি নামগুলি এসেছে। আর তাওকতের পরের নামটিই হল এই ‘যশ’।
তবে এই যশের পর আরও যে যে ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়েছে সেগুলি হল – গুলাব (পাকিস্তান), সাহিন (কাতার), জাওয়াদ (সৌদি আরব), অশনি (শ্রীলঙ্কা), সীতরাং (থাইল্যান্ড), মানদৌস (সংযুক্ত আরব আমিরশাহি) এবং মোচা (ইয়েমেন)।
মৎস্যজীবীদের ইতিমধ্যে সমুদ্র থেকে ফেরত আসতে বলা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকাগুলি থেকে মানুষজনকে সরানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তৈরি থাকতে বলা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলাকারী দলকেও। এছাড়া বাতিল করা হয়েছে পুরকর্মীদের ছুটিও। পাশাপাশি প্রশাসনের তরফ থেকে আরও বেশ কিছু নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার যথেষ্ট তৎপরতার সঙ্গে কাজ শুরু করেছে এই 'যশ' এর সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য।
Post a Comment
আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন