রোজা রেখে শরীরকে সুস্থ রাখবেন কিভাবে ? পবিত্র রমজান মাসের শুভেচ্ছা সকল পাঠককে
How to keep the body healthy during the holy month of Ramadan : সারা বিশ্বের সাথে সাথে যখন
বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা বাড়ছে । ঠিক সেই মুহুর্তেই শুরু হচ্ছে রোজা ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়িয়ে চলতে হলে সতর্কতা
পদক্ষেপের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে ।
তাহলে রোজা রেখে কিভাবে রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায় ? সেটি জানতে হলে এই লেখাটি প্রথম থেকে শেষ
পর্যন্ত পড়ুন ।
পর্যাপ্ত জল পান করুন –
বিশেষজ্ঞরা বলছেন সুষম
ডায়েট পরিকল্পনা করে রোজা রাখা হলে তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে পারে ।
সেক্ষেত্রে প্রথমেই যেটি খেয়াল রাখতে হবে তা হল দেহের চাহিদা অনুযায়ী অন্তত ২.৫
থেকে ৩ লিটার জল পান করতে হবে । আর এটা করতে হবে ইফতারের পরপরই ।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া –
ভিটামিন সি শরীরের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় । তাই কমলা জামরুল বা লেবু জাতীয় খাবার । এবং করল্লা ,
আমলকি , পেয়ারা এগুলোতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি রয়েছে । এসময় যেহেতু কমলা বেশি
একটা পাওয়া জাচ্ছে না তাই এর বিকল্প হিসাবে পেয়ারা বা আমলকি খাওয়া যেতে পারে । এবং
এই খাবার ইফাতারে অন্তত চারদিন রাখলে পর্যাপ্ত পরিমান ভিটামিন সি পাওয়া যাবে বলে
আশা করা যায় ।
কিন্তু বাইরে যেহেতু যাওয়া
যাচ্ছে না , তাই ফলমূল পাওয়াটা বেশ ঝামেলায় হতে পারে । সেক্ষেত্রে কিভাবে পূরণ হবে
ভিটামিন সি এর চাহিদা ? সেটারও উপায় রয়েছে । অঙ্কুরিত ছোলা ভিটামিন সি এর একটি
ভালো উৎস । ছোলা অঙ্কুরিত করতে হলে একরাত
ভিজিয়ে রাখতে হবে । তারপর একরাত ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখলে ছোলা থেকে ছোট ছোট শেকড় বের হয় । অর্থাৎ ছোলা অঙ্কুরিত হয় ।
তখন এটা খাওয়া যেতে পারে ।
রঙিন শাক সব্জি খাওয়া –
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
শক্তিশালী করার আর একটি ভালো উপাদান হচ্ছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট । যেকোন রঙিন
শাকসবজী তে অ্যান্টি অক্সিডেণ্ট থাকে । এগুলো বাজার থেকে কেনার পর সতর্কতার অংশ
হিসাবে যদি অন্ততপক্ষে ১৪ মিনিট লবণজলে ভিজিয়ে রাখা হয় কিংবা পাচ লিটার তিন চামচ
সিরকা মিশিয়ে কিছুক্ষন ভিজিয়ে রাখা হয় তাহলে আর কোন ঝুঁকি থাকে না ।
খেজুরের মধ্যে প্রচুর
পরিমান অ্যান্টি অক্সিডেণ্ট থাকে । এটা ইফতারিতে একটু বেশিই খাওয়া যেতে পারে ।
জিঙ্ক , সেলেনিয়াম , ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান –
জিঙ্ক খুব ভালো পরিমানে
পাওয়া যায় মাংস , পালং শাক , ছোলার ডাল , মসুরের ডালে । এখানে আবারও আসছে ছোলার
কথা । আর ছোলা তো আমাদের ইফতারিতে প্রতিদিনই থাকে । তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে খুব
বেশি তেল মশলা দিয়ে যাতে ছোলা রান্না করা না হয় । খুব বেশি ক্লোলেস্টেরলের সমস্যা
যদি না থাকে তাহলে সপ্তাহে দুইদিন মাংস খাওয়া যেতে পারে । এছাড়া মিষ্টি কমলার বিচ
, বাদাম এগুলোতেও জিঙ্ক প্রচুর পরিমানে থাকে ।
সেলেনিয়াম প্রচুর পরিমানে
পাওয়া যায় ইলিশ মাছ আর সরিষার দানার মত খাবারে । সপ্তাহে অন্তত একবার যদি এই
খাবারগুলো মেনুতে থাকে তাহলে সেলেনিয়ামের চাহিদা পূরণ হতে পারে ।
প্রোটিন বেশি খাওয়া , চর্বি এড়িয়ে চলা –
ছোলার ডাল , ডালের পেঁয়াজি
এগুলো ইফতারে প্রচুর পরিমানে খাওয়া হয় । এগুলোতে ভালো পরিমানে প্রোটিন থাকে । তবে
এইসময় ট্রান্স ফ্যাট বা রূপান্তরিত চর্বি যা সাধারণত বেকারি পন্যতে পাওয়া যায়
সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে । কাঁচা চিনি বা সরাসরি চিনি খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন সরাসরি
চিনি খাওয়া হলে তা শরীরে ভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কমিয়ে দিতে পারে ।
টারমারিক টি বা হলুদ চা –
জলের মধ্যে আদা , গোলমরিচের
গুঁড়ো এবং লঙ দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে তাঁর মধ্যে এক থেকে দুই চিমটি হলুদের গুঁড়ো
মিশিয়ে নিতে হবে । যাদের ডায়াবেটিস নেই তারা মধু মিশিয়ে খেতে পারেন । এসব মশলাই
শক্তিশালী কিছু অ্যান্টি ভাইরাল উপাদান আছে ।যার কারনে এই বিশেষ ধরনের চা শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে । ইফতারের পরবর্তী সময়টাতে এই চা দুই থেকে
তিনবার খাওয়া যেতে পারে । এছাড়া ইফতারের পর নিয়মিত কুসুম কুসুম জল গরম করে লবণ
মিশিয়ে গারগিল করা , রঙ চা বা গরম স্যুপ খাওয়া ভাইরাস আক্রমণের এই সময়টাতে সুস্থ
থাকতে সাহায্য করতে পারে ।
সবশেষে ঘরে থাকুন , সুস্থ থাকুন । লক ডাউনের নিয়ম মেনে পবিত্র রমজান মাস পালন করুন । সকল পাঠকের উদ্দেশ্যে পবিত্র রমজান মাসের শুভেচ্ছা রইল ।
তথ্য সূত্র – বিবিসি বাংলা
ভালো লাগলে লেখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন ।
MOST IMPORTANT LINKS
শিক্ষা সঙ্ক্রান্ত সকল খবর পেতে - CLICK HERE
To get updated in the English language - CLICK HERE
Post a Comment
আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন